আমরা জানি যে আমাদের দেহের প্রতিটি অঙ্গ - প্রতঙ্গ এমন ভাবেই তৈরী যেন তা আমাদের উপকারে আসে । আমাদের দেহের সম্পূর্ণ ভর বহন করে পা এবং এ জন্যই পা - কে সেই ভাবেই প্রস্তুত করা হয়েছে । আমরা এটাও জানি যে প্রাকৃতিক সমাধানের উপরে আর ভালাে কোন সমাধান হয় না , আর তাই এটা সহজেই অনুমেয় যে হাটা - হাটি একটি ভালাে কাজ । নিয়মিত হাটার ফলে আমাদের দেহ যেমন থাকে সুস্থ্য , তেমনি আমাদের আয়ুও বাড়ে । আসুন , আমরা আজকের সম্পূৰ্ণায় দেখবাে হাটার বিশ ( ২০ ) উপকারীতা , যা ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযােজ্য ।
১. নিয়মিত হাটলে হার্ট ভালাে থাকে এবং হার্টে ব্লক তৈরী হয় না ।
২. হাটা দেহের রক্ত চলাচল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে । ফলে ব্রেইন এবং হার্ট এট্যাকের ঝুঁকিও কম হয় ।
৩. প্রতিদিন হাটলে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে । নিয়মিত হাটলে ৬০ Percent উচ্চরক্তচাপের রােগী ঔষধ ছাড়াই নিন্ত্রণে রাখতে পারেন ।
৪. হাটলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মেদ ভূড়িও কম হয় ।
৫. হাটার ফলে রক্তে চর্বির পরিমান কমে যাওয়ার ফলে ধমণীতে ফলক সৃষ্টি হতে পারে না ।
৬. অনেকরই বুকে এবং পেটে চর্বি জমার ফলে হৃদরােগের ঝুঁকিতে থাকেন । প্রতিদিন এক ( ১ ) ঘন্টা হাটলে চর্বি কমে গিয়ে ঝুঁকিও কমে আসে ।
৭. নিয়মিত হাটলে যাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে তাদের মধ্যে প্রায় ৬৩ Percent লােকের স্ট্রোকের ঝুকি কম হয় ।
৮. নিয়মিত হাটার ফলে হার্ট বিট প্রতিদিন ২০,০০০-৩০,০০০ বার স্পন্দিত হয় যার ফলে আপনার দৈনন্দিন বাড়তি কাজের চাপে হার্টের উপর প্রভাব কম পড়ে । এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে , যারা প্রতিদিন আট ( ৮ ) কিলােমিটার হাটেন , তাদের আয়ু বৃদ্ধি পায় ।
৯. যাদের ডায়বেটিকস আছে , তারা যদি প্রতিদিন হাটেন , তাহলে ডায়বেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকে ।
১০. হাটার ফলে রাতের ঘুম ভালাে হয় , হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ও ক্ষুধা বাড়ে ।
১১. নিয়মিত হাটায় কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায় ও কাজের প্রতি অনিহা থাকে না ।
১২. হাটার ফলে হার্ট , কিডনি , যকৃত ও ফুসফুসসহ অন্নান্য অঙ্গের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায় ।
১৩. সাধারণত ৩০ বছর বয়সের পর শরীরের চামড়া ঢালা হতে থাকে । নিয়মিত হাটলে এ সমস্যার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় । যারা আগে থেকেই নিয়মিত হাটে , তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে শরীরের চামড়া অনেক বয়স পর্যন্তও টান টান থাকে ।
১৪. হাটার ফলে চেহারা ও দেহের সৌন্দৰ্য্য ভালাে থাকে ।
১৫. যারা নিয়মিত হাটেন তারা ৭০ বছর বয়সেও বেশ শক্ত সবল থাকেন ।
১৬. নিয়মিত হাটার ফলে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং যৌবনকাল দীর্ঘায়িত হয় ।
১৭.শরীরের ভিতর বিভিন্ন সমস্যা যেমন , ঝিমঝিম ভাব , বাত ব্যাথা , ম্যাচমেচে ভাব থাকা ইত্যাদি ভাব প্রতিদিন হাটার ফলে কমে যায় ।
১৮. গবেষনায় দেখা যায় যেসকল মেয়েরা নিয়মিত হাটেন , তাদের ব্রেষ্ট ক্যান্সার হবার ঝুকি অন্য মেয়েদের থেকে ৪৫ Percent কম থাকে ।
১৯. মনােবিজ্ঞানীদের মত মন - মেজাজ ঝরঝরে এবং ভালাে রাখতে হাটার উপরে ভালাে কোন ঔষধ নাই ।
২০. রৌদ্রে হাটার ফলে আপনার দেহ ভিটামিন ডি পায় , যা সাধারণত খাবার থেকে আসে না এবং রৌদ্রে হাটার ফলে আপনি পেতে পারেন ।
আমরা এখন এটা বলতে পারি যে এই ২০ টি উপকারীতা সম্পর্কে পড়বার সময় আপনি মােটামুটি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন যে আপনি এখন থেকে হাটবেন , এবং আমরা সেটাকে অভিনন্দন জানাই । আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনে হাটার জন্য কিছু সময় রেখে নিজেই থাকতে পারেন অনেক সুস্থ্য ।
আর আপনার হাটা - হাটি শুরু করতে নিচের কয়েকটি টিপস অনুসরণ করতে পারেন ।
১. প্রথম দিনেই প্রচুর পথ হাটবেন না । প্রথম দিন অল্প থেকে শুরু করুন , এরপর প্রতি দু - তিন দিন পর পর সামান্য একটু পথ বাড়িয়ে নিন ।
২. হাটবার সময় দেহ সােজা করে হাটবেন , কুজো বা বাঁকা হয়ে হাটবেন না ।
৩. হাটা শুরু করবার আগে অন্তত দুই ( ২ ) গ্লাস পানি পান করে নিবেন ।
৪. অফিস থেকে বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেরবার সময় বাস থেকে আগের স্টপেজেই নেমে পড়ুন , এতে করে স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশীই হাটা হবে ।
৫. হাটার জন্য পাতলা স্যান্ডেল বা জুতা হলে ভালাে হয় । ভারী কোন কিছু পরে বেশী হাটলে পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা হতে পারে । আশাকরি আমাদের টিপস গুলি আপনাকে সাহায্য করবে আপনার হাটা - হাটি শুরু করতে ।
0 Comments