প্রচন্ড গরমে সুস্থ্য থাকা
প্রচন্ড গরমে সুস্থ্য থাকা প্রায় একটা অসম্ভব বিষয় । তবে হ্যাঁ , আমরা চাইলেই সামান্য চেষ্টাতেই থাকতে পারি সুস্থ । আর এর জন্য দরকার সচেতনতা , একটু সাবধানতা । আর তাই , আমরা আজকে সম্পূর্ণায় হাজির হয়েছি গরমে সুস্থ্য থাকবার কিছু উপায় নিয়ে । আশাকরি এগুলি আপনাদের কাজে দিবে ।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিনঃ
গরমের সময় আমাদের দেহ থেকে এমনিতেই প্রচুর ঘাম বের হয় ; ফলে আমরা দ্রুতই দুর্বল হয়ে পড়ি । আর যদি পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া হয় , তাহলে বিপদটা আপনারই হবে । তাই বিশ্রামের বিষয়ে যথেষ্ট নজর দিতে হবে ; কোন ভাবেই অতিরিক্ত পরিশ্রম করা যাবে না ।
কিছু সময় মেঝেতে শুয়ে থাকুনঃ
বাইরে থেকে ফিরে একটু জিড়িয়ে নিয়ে শরীর মুছে তারপর আস্তে করে মেঝেতে টান টান হয়ে শুয়ে পড়ুন । এতে করে আপনি যেমন বিশ্রাম করতে পারেবন , তেমনি শরীরের মধ্যের রক্ত সঠিক ভাবে চলাচল
পানি , পানি , পানি , প্রচুর পানি পান করুনঃ
গরমের দিনে আমাদের পানি পান করা উচিৎ প্রচুর পরিমানে ; ঘামের সাথে পানি এবং লবন বের হয়ে যায় । এ জন্য সামান্য স্যালাইন খেতে পারেন ; তবে প্রচুর স্যালাইন খাওয়া ঠিক নয় । তবে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করুন । তাহলে দেহ থাকবে ঠান্ডা , শরীর থাকবে ঝরঝরে । সাথে সাথে অন্য তরল খাবার যেমন জুস , আখের রস , স্যুপ , হালিম ইত্যাদি খেতে পারেন ।
আসল ফলের জুস খান , বােতলের জুস এড়ানঃ প্রচুর পরিমানে বােতলের জুস এবং ঠান্ডা পানিয় এড়িয়ে চলাটাই শ্রেয় । বাজারে যেসব জুস পাওয়া যায় , এর প্রায় সবই ফ্লেভারড জুস ; অর্থাৎ এতে মূল ফল বা মূল উপাদান কম , কেমিক্যাল বেশী । তাই এগুলি খাওয়া উচিৎই নয় । আবার ঠান্ডা পানিয় গুলি কার্বোহাইড্রেড থাকে ; যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর । যদি সম্ভব হয় ঘরেই ফলের জুস তৈরী করুন ; এবং সেটি পান করুন । আর আখের রস একটু বুঝে শুনেই পান করা ঠিক হবে ; কেননা ঢাকা শহরে আখের জুসের সাথে যেই বরফ দেওয়া হয় , তার কোয়ালিটি খুবই খারাপ ; এবং এগুলি খােলা থাকার ফলে প্রচুর ধূলা - বালি পড়ে ; ফলে হিতে - বিপরীত হতে পারে ।
বেশী করে খান টক / ভিটামিন সি জাতীয় খাবারঃ
গরমের মধ্যে টক জাতীয় খাবার প্রচন্ড পরিমানে উপকারী । তেতুলের সরবত , কাঁচা আমের জুস , কাঁচা আম ভর্তা ইত্যাদি খেতে পারেন । এগুলি আপনার দেহ এবং মনকে করবে চনমনে , সজীব ।
এড়িয়ে চলুন ধূমপান - এলকোহলঃ
ধূমপান এবং এলকোহল সব সময়ের জন্যই ক্ষতিকারক , কিন্তু গরমের দিনে এগুলি আরও বেশী ক্ষতিকারক । এতে দেহের শুস্কতা বাড়ে , এবং মেজাজ রূক্ষ হয় । তাই এগুলি এড়িয়ে চলাই উত্তম । আপনার সঙ্গী যদি ধূমপান করে , তাকেও বিরত করুন । আর রাস্তা - ঘাটে ধূমপান থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন , কেননা আপনার ধূমপানের জন্য এই গরমের মধ্যে অন্য কারও বিরক্তির মাত্রা বেড়ে যেতে পারে ।
হালকা রং এর পােশাকই বাঞ্চনীয়ঃ
গরমের দিনে গাঢ় রং এর পােশাক যদুর সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিৎ । কেননা এগুলি রৌদ্রের তাপ শােষন করে প্রচুর পরিমানে । অপর দিকে হালকা রং এর পােশাক রৌদ্রের তাপ শােষন করে কম , ফলে শরীর গরম হয় কম ।
সুতি কাপড়রের ঢিলেঢালা পােশাক পরুনঃ
সুতি কাপড়ের পােশাক গরমের দিনে বেশী উপকারী । আর ঢিলেঢালা পােশাক দেহের সাথে লেগে থাকে না ; তাই তা পরতেও বেশী স্বাচ্ছন্দ বােধ করবেন । আর হ্যাঁ , ভুলেও গরমের মধ্যে সিন্থেটিক কাপড়ের পােশাক পরা একেবারেই উচিৎ নয় ; এসব কাপড়ে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে দ্রুত , এবং তাপমাত্রা পােশাকের ভিতরে রয়ে গিয়ে শরীর বেশী সময় গরম রাখে । ফলে আপনি দ্রুতই গরমে হাপিয়ে উঠবেন ।
এড়িয়ে চলুন সূর্যালােকঃ
সূর্যের আলাে সরাসরি দেহে লাগানাে থেকে বিরত থাকুন ; বিশেষ করে মাথায় । এর জন্য ছাতা ব্যবহার করা যেতে পারে । তবে হ্যাঁ অবশ্যই কালাে ছাতা এড়িয়ে যাবেন ; ব্যবহার করুন রঙ্গীন ছাতা । এখন বাজারে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্যই সুন্দর সুন্দর ছাতা পাওয়া যায় ; যা হালকা এবং ভাজ করে ছােট করা যায় । ফলে সহজে বহন যােগ্য । রিক্সায় উঠলে অনেকেই রিক্সার হুড খুলে দেয় ; কিন্তু উচিৎ হুড টেনে দিয়ে বসা , যাতে শরীরে রৌদ্র কম লাগে ।
আশাকরি উপরের টিপস গুলি আপনাকে এই গরমেও ভালাে থাকতে সাহায্য করবে ।
আর আমরা যদি কোন কিছু বাদ দিয়ে গিয়ে থাকি , তাহলে তা আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন ; আমরা যােগ করে দিবাে । আর যদি লেখাটা কাজে লাগে বা ভালাে লাগে , অবশ্যই তা সবার সাথে শেয়ার করবেন ।
0 Comments