ঋতুর পরিবর্তনে শীতের শেষে আসছে বসন্তকাল । তবে শীতের শেষে বসন্তের শুরুতে আপনি যে কোনাে সময়ই ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন জ্বর - কাশিতে ভুগতে পারেন । এছাড়াও এলার্জিজনিত হাঁচি - কাশির সমস্যাও এ সময় বেশী হয় , তাই যাদের এই এলার্জি আছে , তাদের নিতে হয় বাড়তি সতর্কতা । বসন্ত ঋতুতে শরীরে সাধারণত গলা ব্যথা , এলার্জির সমস্যা , হাঁচি - কাশি , জ্বর , পেটের অসুখ , মাথা ব্যথা , চোখ ওঠা রােগ , নাকের সমস্যা ও শরীর ব্যথার মতাে সমস্যাগুলাে বেশি হয় । অন্যদিকে বিপুল সংখ্যক মানুষ এ সময় সাধারণ জ্বর যা ফ্লু নামে পরিচিত এবং ঠান্ডাজনিত গলা ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় ভােগেন ।
কারণঃ
এ ঋতুতে আবহাওয়া পরিবর্তনটা হয় একটু দ্রুতই । যার ফলে বাতাসের আর্দ্রতা পরিবর্তিত হয় বারবার । যেহেতু দ্রুত তাপমাত্রা ওঠা - নামা করে এবং এর ফলে আমাদের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবস্থা হঠাৎ করেই ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্যর্থ হয় । এতেকরে রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা হঠাৎই একটু দুর্বল হয়ে পড়ে আর সেই সুযােগটাই গ্রহণ করে বিভিন্ন রােগ জীবাণু । আবার এ সময়ে ফুলের রেণু বাতাসে ভেসে বেড়ায় । যার ফলে এই ভেসে বেড়ানাে ফুলের রেণু ও রাস্তার ধুলা ধোঁয়া নিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শ্বাসনালিতে ঢুকে পড়ে শ্বাসতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে ।
প্রতিকারঃ
জ্বরঃ
ঠান্ডা - কাশি - জ্বর সহ মাথাব্যাথায় আতঙ্কিত না হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালাে । তবে প্রাথমিক হিসাবে যথাযথমাত্রায় প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ সেবন করা যেতে পারে । আর এর পাশাপাশি সাধারণ তাপমাত্রার পানিতে ভেজানাে তােয়ালে বা পরিস্কার ন্যাকড়া দিয়ে মাথা সহ সারা দেহ মুছে দেওয়া যেতে পারে । আর জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটে নেমে না আসা পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারেন । সাথে প্রচুর পানি , ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশী করে খাওয়া উচিৎ । তবে বাচ্চাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে । জ্বর ১০২ ডিগ্রির উপরে গেলেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিৎ ।
হাঁচি - সর্দিঃ
এটি প্রতিরােধের জন্য মূলত বাইরে নাকে - মুখে মাস্ক ব্যবহার করাই শ্রেয় । আর সাথে একটু একটু গরম পড়েছে বলে গরম কাপড় পরা একেবারে ছেড়ে দিতে নেই । বরং এ সময়ের ঠান্ডাবাতাস বুকে বসে গিয়ে অবস্থা আরও বেগতিক করে দিতে পারে । সাধারণত ২-৪ দিনের মধ্যে হাঁচি - সর্দি ঠিক হয়ে যাবার কথা , তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি ২/৩ সপ্তাহও লাগতে পারে । যাদের এলার্জির সমস্যা আছে , তারা এলার্জির ঔষধ খেতে পারেন । আর নাক এর্টে গেলে নাকে ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন ; কিন্তু সাবধান থাকবেন , যেন প্রতিদিনই এটা ব্যবহার করা না হয় ।
সকল ক্ষেত্রে করণীয়ঃ
প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা , ভিটামিন সিযুক্ত ফলমূল ও শাকসবজি বেশি করে খাওয়া , আদাযুক্ত লাল চা খাওয়া । এসময়ে ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার ও আইসক্রিম খাওয়া থেকে বিরত থাকা । আর প্রতিদিন নিয়মিত সঠিক সময়ে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে ।
0 Comments